ধর্মান্তর বিরোধী বিল নিয়ে কর্ণাটকে রাজ্যসভায় বিজেপি, কেন গির্জায় ভাঙচুর হল?
কর্ণাটকে, বিতর্কিত ধর্মান্তর বিরোধী বিল নিয়ে বিতর্কের মধ্যে রাজ্যের একটি গির্জায় আবার ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।
এই ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন ডানপন্থী সংগঠনের লোকজন মাত্র কয়েকদিন আগে কোলারে খ্রিস্টানদের সম্পর্কিত একটি ধর্মীয় বই পোড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিল। ডানপন্থী সংগঠনগুলো কর্ণাটকের গির্জাগুলোর বিরুদ্ধে জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ এনেছে।
চার্চের যাজক জোসেফ অ্যান্থনি ড্যানিয়েলস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় 65 কিলোমিটার দূরে সরাইপালিয়ার চার্চটি সকাল ৫:৩০ টার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যাজকের সাথে বসবাসকারী ব্যক্তি প্রথমে ক্ষতি দেখেন এবং যাজককে ঘটনাস্থলে ডাকেন। পুরোহিত নিজেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ধর্মান্তর বিরোধী বিল নিয়ে হট্টগোল
বৃহস্পতিবার কর্ণাটক বিধানসভায় বিতর্কিত ধর্মান্তর বিরোধী বিল আলোচনার জন্য রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে এই বিল নিয়ে বিধানসভায় তুমুল হট্টগোল হয়। বিরোধী দল কংগ্রেস এই বিলের তীব্র বিরোধিতা করছে। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় এই বিলটি আলোচনার জন্য বিধানসভায় উত্থাপন করার কথা থাকলেও তা একদিন বাড়ানো হয়।
কর্ণাটকে একটি বিজেপি সরকার রয়েছে এবং ২১ ডিসেম্বর সেখানকার মন্ত্রিসভা এই বিলটি অনুমোদন করেছিল। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই বিলটির সমর্থনে বলেছেন, রাজ্যে "লোভের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পটভূমি পরিবর্তনের প্রচেষ্টা" চ্যালেঞ্জ করার জন্য ধর্মান্তর বিরোধী বিলটি প্রয়োজনীয় ছিল।
নতুন আইনে কী শাস্তি থাকছে....
ধর্মান্তর বিরোধী বিলে শাস্তির মেয়াদ তিন বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর এবং জরিমানার পরিমাণ ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে এক লাখ ৫ লাখ করার বিধান রয়েছে। এই বিলে ধর্মের স্বাধীনতার অধিকার সুরক্ষার বিধান করা হয়েছে এবং বলপ্রয়োগ, অযাচিত প্রভাব, জবরদস্তি, প্রলোভন বা যে কোনও প্রতারণামূলক উপায়ে এক ধর্ম থেকে অন্য ধর্মে বেআইনি ধর্মান্তর নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে চান, তাহলে তাকে ৩০ দিন আগে ঘোষণা দিতে হবে।
বিধানসভায় আলোচনার সময়, কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র বলেছিলেন যে এই আইনটি অবৈধ ধর্মান্তর বন্ধ করবে এবং এটি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়। একইসঙ্গে কংগ্রেস এই বিলটিকে সংখ্যালঘু বিরোধী বলে বর্ণনা করেছে।
ধর্মের স্বাধীনতা বিল, ২০২১ বা ধর্মান্তর বিরোধী বিলের বিরুদ্ধে বুধবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অন্তত 40টি সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনের কয়েকশ সদস্য বেঙ্গালুরুতে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করেছে। এই বিল এবং সাম্প্রতিক সময়ে গির্জায় হামলার ঘটনায় খ্রিস্টধর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা খুবই উদ্বিগ্ন।
কর্ণাটক সম্পর্কে কিছু তথ্য....
কর্ণাটক (কন্নড়: ಕರ್ನಾಟಕ, প্রতিবর্ণী. কর্নাটক টেমপ্লেট:IPA-kn, কন্নড়িগাদের দেশ) হল দক্ষিণ পশ্চিম ভারতের একটি রাজ্য। ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বর রাজ্য পুনর্গঠন আইন বলে এই রাজ্য স্থাপিত হয়। রাজ্যটির আদি নাম ছিল মহীশূর রাজ্য। ১৯৭৩ সালে রাজ্যের নাম বদলে রাখা হয় কর্ণাটক।
কর্ণাটক বিধানসভা
কর্ণাটকের পশ্চিমে আরব সাগর, উত্তর-পশ্চিমে গোয়া, উত্তরে মহারাষ্ট্র, পূর্বে অন্ধ্রপ্রদেশ, দক্ষিণ-পূর্বে তামিলনাড়ু এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে কেরল অবস্থিত। রাজ্যের মোট আয়তন ১,৯১,৯৭৬ বর্গকিলোমিটার (৭৪,১২২ মা২) (ভারতের মোট ভৌগোলিক আয়তনের ৫.৮৩%)। কর্ণাটক আয়তনের হিসেবে ভারতের অষ্টম বৃহত্তম এবং জনসংখ্যার হিসেবে ভারতের নবম বৃহত্তম রাজ্য। এই রাজ্যে ৩০টি জেলা রয়েছে। রাজ্যের সরকারি তথা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা কন্নড়।
কর্ণাটক দুটি প্রধান নদী অববাহিকায় অবস্থিত। রাজ্যের উত্তরে রয়েছে কৃষ্ণা ও তার উপনদীগুলির (ভীমা, ঘটপ্রভা, বেদবতী, মালপ্রভা ও তুঙ্গভদ্রা)। দক্ষিণে রয়েছে কাবেরী ও তার উপনদীগুলির (হেমাবতী, শিমশা, অর্কবতী, লক্ষ্মণতীর্থ ও কবিনী) অববাহিকা। এই নদীগুলি পূর্ববাহী। সব কটিই বঙ্গোপসাগরে পড়েছে । তথ্য সূত্র : উইকিপিডিয়া
ধর্মের ভিত্তিতে কর্ণাটকের জনসংখ্যার বিবারণ:
আরো পড়ুন:
ভাইভোঁটার শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা ও উৎপত্তি ইতিহাস
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে, এক নির্ভীক ক্ষণজন্মা বিপ্লবী অগ্নিশিশু ছিলেন ক্ষুদিরাম বসু।
চণ্ডীদাস আর রজকিনী’র প্রেমের ইতিহাস
`নার্সিসিজম' ব্যক্তিকে; হাস্যকর করে, বন্ধুহীন করে।
Comments
Post a Comment