Posts

Showing posts from June 13, 2021

কলিযুগে সংঘ শক্তি: চৈতন্য মহাপ্রভু

Image
শাস্ত্রানুসারে বর্তমান সময়কে কলিযুগ বলা হয়। শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু কলিযুগের অবতার। যিনি হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রের প্রবক্তা। চৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, “সঙ্ঘ শক্তি কলৌ যুগে ” । তিনি তৎকালীন সময়ে অত্যাচারী চাঁদ-কাজীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে মশাল মিছিল করেন। আমরা হয়ত অনেকেই জানি এবং বিশ্বাস করি কলিযুগে টিকে থাকতে হলে এবং আসুরিক শক্তিকে প্রতিহত করতে হলে সংঘ শক্তির বিকল্প নেই। তবুও আমরা সংঘবদ্ধ হতে পারছি না। কিন্তু কেন?

মস্তকে শিখা ধারণ করব কেন?

Image
— জ্ঞানাগ্নি শিখাই হইল আসল শিখা। অর্থাৎ আমাকে আত্মজ্ঞান, তত্ত্বজ্ঞান বা ব্রহ্মজ্ঞান এই জীবনেই লাভ করিতে হইবে — ইহা স্মরণ রাখিবার জন্যই আমাদের শিখা ধারণ করা। তাই এখানে শিখা সম্পর্কিত বিশেষত শাস্ত্র প্রমাণ উল্লেখ করা হল। সর্বাপেক্ষা প্রাচীন বৈদিক সংস্কৃতির অন্তর্গত দশবিধ সংস্কারের অন্যতম হলো চূড়াকরণ বা শিখাধারণ। বৈদিক সংস্কৃতি অনুসারে, চূড়াকরণ ও উপনয়ন তথা দীক্ষাকালে মস্তক মুণ্ডন মস্তক এর পেছন দিকে মধ্যভাগে একগুচ্ছ কেশ রাখতে হয়। এই কেশগুচ্ছকে বলা হয় শিখা। আবার, ভগবৎ-চেতনা দান করে বলে একে চৈতন্য বলা হয়। গৌড়ীয় বৈষ্ণব অভিধানে শ্রীধর স্বামী ব্যাখ্যা করেছেন, শিখা হচ্ছে মস্তক মধ্যস্থ কেশপাশ। বৈদিক সংস্কৃতির অঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও কলিযুগের প্রভাবে অপসংস্কৃতি চর্চায় উৎসুক মনুষ্য আজ এসম্পর্কে কোন ধারণাই রাখে না। সেকারণে শাস্ত্রজ্ঞানের অভাবে তথা অজ্ঞতাহেতু একে টিকি-এন্টেনা বলে কাউকে উপহাস করতে দেখা যায়। আবার কেউ কেউ মনে করে থাকেন এটি অশাস্ত্রীয়। বেদ: শিখিভ্যঃ স্বাহা। অর্থাৎ, শিখাধারীদের কল্যাণ হোক। অথর্ববেদ (১৯.২২.১৫) অতএব, বৈদিক শাস্ত্রে বহু প্রমাণ থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মাণ হয় যে, পরশ্রীকা...

ভগবান কাহাকে বলে?

Image
  সমগ্র ঐশ্বৰ্য্য , বীৰ্য্য , যশ , শ্রী , জ্ঞান ও বৈরাগ্য — এই ছয়টিকে ‘ ভগ ' বলে । এই ছয়টি গুণ যাঁহার মধ্যে পূর্ণভাবে বিদ্যমান , তাঁহাকে ভগবান বলে | “ ঐশ্বৰ্য্যস্য সমগ্ৰশ্চ বীৰ্য্যস্য যশসঃ শ্রিয়ঃ ।। জ্ঞান - বৈরাগ্যয়াশ্চৈব ষগ্নাং ভগ ইতীঙ্গনা ।।” উৎপত্তিং চ বিনাশঞ্চ ভূতানামাগতিং গতিম্ । বেত্তি বিদ্যামবিদ্যাঞ্চ স বাচ্যো ভগবানিতি ।। — বিষ্ণুপুরাণ অর্থাৎ   যিনি প্রাণীগণের উৎপত্তি ও বিনাশ , পরলোকে গতি ও ইহলোকে আগমন , বিদ্যা ও অবিদ্যা — সমস্তই অবগত আছেন তাহাকে ভগবান বলে । অথচ ভারতীয় উপমহাদেশে গত 200 বছরে শতশত ভগবানের জন্ম হয়েছে। তারমধ্যে কয়েকজনের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে, যেমন- রামরহিম, রাঁধে মা প্রভূতি। বাকিরা এখনো তার শিষ্যদের কাছে ভগবান রূপেই পূজিত। শিষ্য গুরুকে শ্রদ্ধা করবে কিস্তু তাকে ভগবানের জায়গা কখনোই দিতে পারেনা। একজন গুরুর দায়িত্ব তার শিষ্যকে ঈশ্বর প্রাপ্তির পথ দেখানো আর শিষ্যের  কর্তব্য হল গুরু নির্দেশিত  পথে জীবন পরিচালিত করা। অথচ গুরু স্বয়ং ঈশ্বর সেজে বসে যান। এজন্য অবশ্যই তাকে সদগুরুর সন্ধান করতে হবে।গুরু যদি হন...

উপবীত বা পৈতার মাহাত্ম্য , উপবীত বা পৈতা কাহাকে বলে?

Image
         যাহা তিনটি দণ্ডে গ্রথিত ও নয়টি সূত্রের সমাহার   তাহাকে উপবীত বা পৈতা বলা হয় । ইহা ব্রাহ্মণদের পবিত্র চিহ্ন । পৈতার এই নয়টি সূত্র নয়টি গুণের প্রতীকস্বরূপ । এই নব গুণাবলী নিম্নরূপ :  ( ১ ) আচার ( সদাচার )          ( ২ ) বিনয়        ( ৩ ) বিদ্যা           ( ৪ ) শম          ( ৫ ) দম         ( ৬ ) তপস্যা       ( ৭ ) ক্ষমা        ( ৮ ) শৌচ ও      ( ৯ ) অহিংসা ।

শরীর রক্ষার প্রয়োজনীয়তা কি?

Image
  মানব জীবনে ধর্ম , অর্থ , কাম ও মোহ্ম এই চতুর্বর্গ শ্রেষ্ঠ ফললাভ করতে চাইলে শরীর সুস্থ্য রাখার প্রয়োজন একান্ত । স্বাস্থ্য এক প্রকার সম্পদ । স্বাস্থ্য ভাল না থাকলে কোন কাজে মন বসেনা । আয়ুর্বেদ শাস্ত্র এজন্যই ঘোষনা করেছেন , ধর্মার্থ - কাম - মোহ্মাণাম্ আরাগ্যং মূল মুত্তমম্ । মহর্ষি সুশ্রুত : প্লাস্টিক সার্জারির জনক স্বাস্থ্য রক্ষায় সনাতন ধর্মে ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হয়েছে বেদের অথর্ব খণ্ডে। এছাড়া চিকিৎসা শাস্ত্রে  সুশ্রুত সার্জারির জনক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত।আমরা জানি, ভারতবর্ষ ধর্মের দেশ। ধর্মকে ধরেই আমাদের জাতি, জীবন ও সম্পদ। আমাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সভ্যতা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবই জাতীয় ধর্ম ভিত্তিক। ঋষি মুনিগণই আমাদের একমাত্র সম্পদ।বর্তমানে আমরা সনাতন ধারা উপেক্ষা করে বিজাতীয় ধারাকে জীবনে মূল্য দিয়েছি বেশী। এর ফলে আমাদের জন্য কোনটি প্রয়োজন, কোনটি অপ্রয়োজন, কোনটি ভাল, কোনটি মন্দ, বিচার করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। বেশী ভাল নিতে গিয়ে যে অনেক মন্দ গ্রহণ করেছি তার ফল আমরা ইতিমধ্যে ভোগ করতে শুরু করেছি। আমাদের আপন ঐতিহ্য, শিক্ষা, সম্পদ, সংস্কৃতি, সভ্...

গঙ্গা স্নানের মাহাত্ম্য ও তার ফলাফল, কবে, কোন স্নান করা উচিত ?.... শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা

Image
 গঙ্গা হল পুণ্যদায়িনী। এটা আমরা সকলেই জানি। তাই আমরা সকলেই গঙ্গা স্নান করে থাকি পুণ্য লাভের আশায়। আবার বাঙালির সমস্ত পূজোতে গঙ্গা জল, গঙ্গা মাটি অবশ্য প্রয়োজনীয়। আর কিছু বিশেষ বিশেষ তিথিতে যদি গঙ্গা স্নান করা যায় তাহলে অনেক পুণ্য সঞ্চয় করা যায়। আসুন জেনে নি সেই বিশেষ তিথিতে গঙ্গাস্নানের মাহাত্ম্য। আমাদের প্রাচীন পুরাণে গঙ্গাস্নানের মাহাত্ম্যের কথা অনেক লেখা আছে। এমনকি গঙ্গার মাহাত্ম্যর কথা ভগবান শিব বলেছিলেন পার্বতীকে। আসুন তাহলে জেনে নিন কোন কোন তিথিতে গঙ্গা স্নান করলে আপনার পুণ্য সঞ্চয় হবে। ১ . দশহরা স্নান ফল - জ্যৈষ্ঠ মাসের মঙ্গলবার শুক্লা দশমী তিথিতে যদি দশহরা পড়ে তাহলে সেদিন গঙ্গা স্নান করলে দশ জন্মের অর্জন করা সব পাপ ক্ষয় হয় আর অযুত অশ্বমেধ যজ্ঞের যে ফল তা লাভ করা যায় । এই যোগ ভাগিরথ দশহরা নামে পরিচিত । ২ . বারুনী স্নান - স্কন্দ পুরাণে লেখা আছে যে চৈত্রমাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে শতভিষা নক্ষত্র যোগ হলে সেই তিথি বারুণী নামে পরিচিত । এই তিথিতে স্নান করলে বহুশত সূর্যগ্রহনের জন্য গঙ্গাস্নানের যে ফল সেই ফল ...