পরম পূজ্যপাদ শ্রীমৎ স্বামী বেদানন্দজী মহারাজের জীবনী

শ্রীভগবান ধৰ্ম্ম সংস্থাপনের জন্য যখন জগতে অবতরণ করেন তখন তার লীলাকার্য্যের সহায়তার জন্য স্বর্গের দেবতারা মর্ত্যে নেমে আসেন। ভগবান যুগাচাৰ্য্য শ্রীমৎ স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজ যখন জগতে অবতীর্ণ হন তখন তার শ্রেষ্ঠ লীলা পার্ষদরূপে যে সমস্ত দেববালক জন্মগ্রহণ করেন তার মধ্যে শ্রীমৎ স্বামী বেদানন্দজী মহারাজ অন্যতম শ্রেষ্ঠ পার্ষদ।


 শ্রীমৎ স্বামীজীর পূর্বাশ্রমের নাম ছিল শ্রীঅমূল্য। ১৯০১ খ্রীঃ যশােহর জেলার সুফলাকাঠি গ্রামে শ্রীমৎ স্বামীজীর শুভজন্ম। অত্যন্ত মেধাবী শ্রীমৎ স্বামীজী কলিকাতায় স্কটিশ চার্চ কলেজে বি.এ. পড়িবার সময় বৈরাগ্যের প্রেরণায় হরিদ্বার, হৃষিকেশে তপস্যার জন্য চলিয়া যান। কিছুদিন পর ফিরিয়া আসিয়া পুনরায় খুলনা জেলার দৌলতপুর হিন্দু একাডেমী কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু ভগবৎ ইচ্ছায় এই সময় তিনি ব্রহ্মচারী কুমুদের সংস্পর্শে আসেন এবং ভগবান আচাৰ্য্যদেবের প্রথম দর্শন লাভে ধন্য হন। তারপর ১৯২১ খ্রীঃ গান্ধীজীর অসহযােগ আন্দোলনে কলেজ বন্ধ হইয়া গেলে তিনি স্থায়ীভাবে সঙেঘ যােগদান করেন। অতঃপর বাজিতপুর সিদ্ধপীঠে অন্যান্য শ্রেষ্ঠ সঙঘ-সন্তানদের সহিত তিনিও ভগবান আচাৰ্য্যদেবের নিকট ১৯২২ খ্রীঃ নৈষ্ঠিক ব্রহ্মচর্য্য সংস্কার এবং ১৯২৪ খ্রীঃ সন্ন্যাস লাভ করেন। তখন তাহার নাম হয়—“স্বামী বেদানন্দজী

 


সঙঘনেতা ভগবান আচার্য্যদের সঙেঘর মধ্যে স্তরে স্তরে যে সমস্ত মহাভাব ফুটাইয়া তলিতে চাহিয়াছিলেন, তাহার মাধকাংশই পূজ্য শ্রীমৎ স্বামীজীর ধ্যান-নেত্রে প্রজ্ঞাদৃষ্টিতে ফুটিয়া ওঠে এবং তিনি তাঁহার বলিষ্ঠ লেখনীতে, প্রবন্ধে, কবিতায় গানে ফুটাইয়া তােলেন পূজ্য শ্রীমৎ স্বামীজীর ন্যায় প্রতিভাধর সাধক না থাকিলে ভারত সেবাশ্রম সঙঘ সঙেঘর আদর্শ, উদ্দেশ্য, লক্ষ্য উচ্চ ভাবাদর্শ সম্পর্কে এত সুন্দর পরিস্কার ধারণা আমরা পাইতাম কিনা সন্দেহ

| ১৯২৭ খ্রীঃ- শ্রীমৎ স্বামীজীর সম্পাদনায় যখন সঙ্ঘের মুখপত্র প্রণবপত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়, তখন ভগবান আচাৰ্য্যদেব তাহাকে আশীর্বাদ করিয়া বলিয়াছিলেন—“ হচ্ছে কলির ব্যাসদেব, এখন হইতে উহার কণ্ঠে মা সরস্বতী বসিবেন

সঙেঘর প্রতিষ্ঠাকালে শ্রীমৎ স্বামীজী ছিলেন সঙেঘর যুগ্মসম্পাদক ইং ১৯৪১ সালে শ্রীমদাচাৰ্য্যদেবের মহাপরিনির্বাণের পর তিনি প্রধান সম্পাদকের পদ অলংকৃত করেন ইং ১৯৬৫ সালে সঙেঘর সহ-সভাপতি হন ইং ১৯৬৯ সালের ২০শে জানুয়ারী অত্যদ্ভুত প্রতিভাশালী সঙেঘর মহাদিকপাল এই সন্ন্যাসী মাত্র ৬৮ বৎসর বয়সে শ্রীগুরুচরণে চির-বিশ্রাম লাভ করেন তাঁহার শ্রীচরণে কোটি কোটি প্রণাম

আরো পড়ুন:

স্বামী শ্রীপ্রণবানন্দ মহারাজ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী ও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ  

পরম পূজ্যপাদ শ্রীমৎ স্বামী সচ্চিদানন্দজী মহারাজের সংক্ষিপ্ত জীবনী 

পরম পূজ্যপাদ শ্রীমৎ স্বামী বিজ্ঞানানন্দজী মহারাজের সংক্ষিপ্ত জীবনী

পূজ্যপাদ শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দজী মহারাজের সংক্ষিপ্ত জীবনী


Comments

Populer Post

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের, প্রবন্ধে সেকালের বাবুচরিত্র

‘সাগুদানা’ একাদশীতে খাবেন? না খাবেন না?

রাজা শান্তনু, সত্যবতী এবং ঋষি পরাশরের অবস্থা মহাভারতের প্রকৃতি বদলে দিয়েছে ।

উপবীত বা পৈতার মাহাত্ম্য , উপবীত বা পৈতা কাহাকে বলে?

বৃন্দাবন ত্যাগ করে চিরতরে মথুরায় গমনকালে শ্রীকৃষ্ণের বয়স কত ছিল- শাস্ত্রীয় রেফারেন্স

বাড়িতে শ্রী গণেশ ঠাকুরের প্রতিস্থাপন এবং কীভাবে বির্সজন করবেন, জেনে নিন সহজ পদ্ধতি