সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে চান? জেনে রাখুন যোগাসন সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় কথা ।

 যে ভঙ্গিমায় শরীরকে রাখলে শরীর স্থির থাকে অথচ কোনোরূপ কষ্টের কারণ ঘটে না, সাধারণ অথে তাকে তাকে যোগাসন বা আসন বলে। সংক্ষেপে স্থির ও সুখজনকভাবে অবস্থান করার নামই আসন। ভারতীয় ঋষিগণ শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং বিভিন্ন রোগ নিরাময় করতে যোগাসন করতেন। বর্তমানে বিশ্ব করোনা মহামারীর কারণে যোগপ্রেমীদের সংখ্যা বেড়েছে। আমরা অনেক সময় না জেনে যোগাসন করতে গিয়ে এর সুফল থেকে বঞ্চিত হই।

জেনে রাখুন যোগাসন সম্পর্কে  কিছু প্রয়োজনীয় কথা 

১। সব সময় আলো বাতাস ও বায়ুপূর্ণ স্থানে যোগাসন করবেন। অসমতল, স্যাঁত-সেঁতে, দুর্গন্ধময় স্থানে যোগাসন করবেন না। যদি বাইরে থেকে গধি আসে তবে ভালো ধুপ জ্বালিয়ে দুর্গন্ধ নাশের চেষ্টা করবেন।

২। যেখানে চেচামেচি হবে, মশার উৎপাত হবে তেমন জায়গায় যোগাসন করবেন না । রান্না ঘরে কেরাসিনের ল্যাম্প জ্বেলে যোগাসন করবেন না।

৩। পরিষ্কার জায়গায় একটি কম্বল দু’ভাজ করে বিছিয়ে তারপরে যোগাসন করবেন। স্টিং নেওয়া গলিতে বা নরম বিছানায় যোগাসন করবেন না।

৪। যোগাসনে বসার সময় পোষাক শক্ত করে পরবেন না। পোষাক থাকবে ঢিলে-তালা। দড়ি দেওয়া ট্রাউজার ও গেঞ্জি পরে যোগাসন করা ভাল।

৫। খালি পেটে বা খাওয়ার ৪-৫ ঘন্টা পরে যোগাসন বসবেন। যে কোন আসন ১৫ সেকেন্ড থেকে ৩০ সেকেন্ড করে শবাসনে ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিয়ে আবারও ৫-৬ বার করবেন।

 ৬। সকালে ঘুম থেকে উঠে মল-মূত্র ত্যাগ করে এক গ্লাস জল খেয়ে যোগাসন করতে পারেন।

৭। কোন সময় দীর্ঘক্ষণ অনাহারে থাকবেন না। সামান্য কিছু খেলেও খাবেন। তা না হালে গ্যাসট্রিক আলসার রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে।

৮। যোগাসনে লিপ্ত হবার সময় সামনে একখান আয়না রাখতে পারেন তাতে আপনার আসনের পশ্যতি ঠিক হচ্ছে কিনা বুঝতে পারবেন।

৯। আপনি প্রতিদিন কিরুপ আসন করবেন তার একটা তালিকা তৈরী করবেন।

(ক)। এমন ২/৪টি আসন রুন যাতে মেরুদণ্ড সামনে।

(খ) ২-৪টি বামে-ডাইনে মোচড় দেওয়া। 

(গ) ২-৪টি পেটের উপর চাপ পড়ে এমন আসনে অভ্যস্থ হবেন।

১০। যোগাসন বসার একটা নির্দিষ্ট সময় করে নেবেন। প্রতিদিন এ সময়ে আসন করবেন। দুবেলা করলে ভালা হয়। মাঝে মধ্যে যদি দু-একদিন বাদ যায় তাতে ক্ষতি হবে।

১১। যারা যোগাসন করেন তাদের প্রতিদিন অন্ততঃ ২/৩ লিটার অর্থাৎ ৫ প্লাস জল পান করা উচিত। আহারের ১ ঘন্টা আগে ও ১ ঘন্টা পরে জল  খাবেন। খাওয়ার সময় জল খাবেন না।

১২। স্নানের সময় ঠান্ডা জলে মাথাটি ভালা করে ধুয়ে নেবেন। আর সোজা হয়ে দাড়িয়ে ঘটি বা মগে করে নাভির গোড়ায় জল নেবেন।

১৩। শীতকালে অনেকেই গরম জলে স্নান করে থাকেন তবে তাদের দেখতে হবে এ তাপ যেন দেহের তাপমাত্রাযর তুলনায় বেশী না হয় বেশি হলে ক্ষতি হবে।

 ১৪। যাদের হাজম করার ক্ষমতা কম তারা হাগলের দুধ খাবেন । তবে দুধ কখনো ঠান্ডা খাবেন না। যাদের লিভারে সমস্যা তারা দুধ ঘি না খেয়ে দই, ঘোল, ছানা খাবেন।

১৫। মাছ-মাংস-ডিম বেশী না খেয়ে কাঁচা সবজি, বাদাম ও ফল খাবেন।

১৬। যারা দুধ খেতে পারেন না তার চীনা বাদাম, পাকা কলা, পেয়ারা, নারিকেল, ছোলা, কাঁচা বা আধাসিদ্ধ সবজি খেতে পারেন।

১৭। দিনের বেলায় ঘোমানোর অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে এবং কম করে রাতে ৬ একে ৮ ঘন্টা ঘুমতে হবে। দশটা থেকে এগারোটার মধ্যে শয্যা গ্রহণ করা ভাল।

১৮। বীর্য ধারণে Sperm Count বারে। এছাড়া বেশ কিছু যোগাসন আছে যেগুলোর মাধ্যমে স্পাম বাড়তে সহায়তা করে।

আসুন নিয়মিত ৩০ মিনিট যোগাসনের মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ্য, প্রাণবন্ত, লাবণ্যময় করি ও সুঠাম দেহ ধরে রাখি।

আরো পড়ুন:

  যোগ, মহর্ষি পতঞ্জলি, অষ্টাঙ্গ যোগ 

  শরীর রক্ষার প্রয়োজনীয়তা কি?

  `নার্সিসিজম' ব্যক্তিকে; হাস্যকর করে, বন্ধুহীন করে।

  চরিত্র গঠন কেন গুরুত্বপূর্ণ ? 

  জীবের খাদ্য এবং খাদ্যাভ্যাস